মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

 উৎসবের মানে

............................


উৎসবের সবচেয়ে বড়ো মহত্ব কি জানেন? আমার মতে মেলবন্ধন ও সংস্কার তৈরি করাই হল যে কোনো উৎসবের মূল তাৎপর্য। এই দেখুন না, চারদিনের উৎসব হল দুর্গাপুজোর নামে এবং কত মানুষ একে অপরের কাছাকাছি এল, এক সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হল। আর এই সম্পর্কের বন্ধন খুবই দৃঢ়। তার প্রধান কারণ হচ্ছে এইসম্পর্কের মধ্যে কোনো স্বার্থ নেই। বেশিরভাগ মানুষই পূর্ব পরিচিত নই তবুও মুহুর্তগুলো ছোটছোট রশির ন্যায় পরস্পরের সাথে শৃঙ্খল তৈরি করে এক মিষ্টি বন্ধনে বেঁধে দিল। আর উৎসব এখানে অনুঘটকের কাজ করে। তাই উৎসব শুধু কয়েকটা হাসি মজার দিন নই,তার সাথে উৎসব আগামী সময়কে সুন্দর বানানোর উপাদান। 

এছাড়াও উৎসব ধর্ম, বর্ণ, জাতপাত, ধনী গরিব ইত্যাদিকে ছাপিয়ে এক নিজস্ব স্বত্তা তৈরি করেছে। মাত্র কয়েকদিনেই আমাদের আসল সামাজিক, মানসিক, ব্যবহারিক, অর্থনৈতিক, পুঁথিগত শিক্ষা, প্রকৃত শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসে। ঠিক যেমন জীর্ণ ফুলগুলিকে ফেলে নতুন ফুল দেওয়া হয় ফুলদানিতে, ঠিক তেমনি এই সমস্ত শিক্ষার মধ্যে মানুষের জন্যে প্রকৃত শিক্ষাকে উদ্ঘাটিত করে। 

তাইতো আমরা সারাদিন খাটাখাটনী করার পরেও হাসি মুখে একে অপরের সাথে কাঁধ মিলিয়ে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আসলে এই পুজো আমাদের একতা, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নিয়মানুবর্তিতা, ব্যবহার, কাজের প্রতি ভালোবাসা, নিষ্ঠা, ভক্তি, যথাযথ সম্মান প্রদান ইত্যাদি বিষয়গুলিকে মনের অন্তরে গেঁথে দিয়েছে। 

উৎসব আসুক প্রতিবছর। আর এই উৎসবই আমাদের সমাজকে সুন্দর ভাবে প্রেম ও ভালোবাসায় বেঁধে রাখবে।


সুমিত মল্লিক


 কুয়াশার মেঘ

সেদিন খানিকটা সুস্থ বোধ করলাম। হৃদয় আর মস্তিষ্কপ্রসূত আবেগের রোষানলে পড়ে শরীরটা বড্ডো নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। কে প্রকৃত বাস্তব মেনে চলে তা বোঝার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল অনুভূতি। এই অনুভূতি আবার স্বল্পমেয়াদি স্কীমে চলে। বাঁধনছাড়া একাকী জীবনকে মাঝে মধ্যেই হিমশিম খায়িয়ে দেয়।


একদিন এই সমস্যার সমাধান করবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। সবাইকে একত্রে আহ্বান করা হলো এবং সবাই আসলো। কিন্তু অনুভূতি সাথে করে "মোহ" কে নিয়ে আসলো।  আসলে মোহ হলো অনুভূতির বন্ধু। "মোহ" আর "মায়া" জমজ ভাইবোন এর মত। তাই প্রথমে চিনতে অসুবিধা হচ্ছিল।

যাইহোক, এবার অনুভূতির বন্ধু তাই কিছু বললাম না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে "মোহ" সবাইকে বিপাকে ফেলল। সবার হৃদয়ে "অনুভূতির" স্থান দিয়ে মোহময় করে তুলল বাকীদেরকে। 

এইভাবেই সবাইকে খর্ব করে মোহ নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করলো। আর এই সাম্রাজ্যের সেনাপতি হিসাবে মায়াকে নিযুক্ত করলো। 

তারপর হৃদয় আর মস্তিষ্ক যেন মায়ার ফাঁদে পড়ে প্রতিনিয়ত আচ্ছন্ন হতে লাগলো। অদ্ভুত ক্ষমতার বলে মায়া আর মোহ অতীত আর বর্তমানের ভালো খারাপের দিক মিশিয়ে দিল। ভবিষ্যতকে আগুনের আঙিনায় রাঙিয়ে দিল এক নিমেষে। 

এইভাবে তারা শরীরকে বিদ্ধ করলো। কিন্তু বহু পরিশ্রমের পর হৃদয় আবার নিজের কথা শুনল। অনেক যুদ্ধ পেরিয়ে হৃদয় "মায়া-মোহ" মুক্ত রাজ্য তৈরি করলো। আর রুদ্ধ করলো মোহ আর মায়ার জন্য স্থান। 


 যুদ্ধের শেষে ক্লান্তি ঘিরে রেখেছে যেন সুবিশাল বটবৃক্ষের মতো। হয়তো আবার যুদ্ধের অশনি সংকেত আসবে, আবার ডঙ্কার বাজবে হৃদয়ের মাঝে, কিন্তু আজ অনেকটা সুস্থ লাগছে।


সুমিত মল্লিক

 

অবিশ্বাসের অতিথি

...........................

আমি ক্ষনিকের অতিথি,

আমি ক্ষনিকের ঢেউ

আমি ক্ষুদ্র ও নগন্য, 

তাই মনে রাখে না কেউ।।


তুমি সাগরের তীর, 

তুমি প্রানের শ্বাসবায়ু,

বসন্তের হিমেল হাওয়া তুমি

আমি অবিশ্বাসের ক্ষনিকের আয়ু।


তুমি রূপকথার সোনালী পরশ

তুমি মিসিসিপি সভ্যতা

আমি বেবাগি নিয়মের ফসকাতে

বেমানান গ্রামের কথা।


তুমি ব্যস্ত, তুমি শহরের জমজমাটি

শীতের কফির কাপের চুমুক

আমি পাহাড়ের ল্যাংটা ছেলেটা

আমি খুঁজিনি নকল সুখ।


তুমি তানপুরার ঝংকারে

উচ্ছাসিনি রাজ কন্যা

আমি পাহাড়ের গ্রামের কোলে

বাঁধ ভাঙা বন্যা।


তুমি সেই রাজপ্রাসাদে

একলা শায়িত শরীর জুড়ে

আমি তবু বিশ্বাস খুঁজি,

খুঁজে চলি সেই সাত ভোরে।

বসন্তের বিলাপ

শীত যাবে, বসন্ত আসিবে নীরবে। তারপর ঝরাপাতা ঠাঁই হবে কুড়ানির ঘরে, তবু বৃক্ষ স্বপ্ন দেখে, বসন্তের বিকালে, রঙিন পাতা বিছিয়ে দেবে, প্রেমিকার তরে...

Popular